মরফিন থেকে ১০০ গুন শক্তিশালী ওষুধ আবিষ্কার

সারা বিশ্বে ব্যাথানাশক হিসাবে ব্যাপক ব্যবহৃত ওষুধ হলো মরফিন।  মরফিন সাধারনত আমাদের CNS( Central Nervous System)  এর ঊপর কাজ করে। সাধারনত তীব্র ব্যাথা বাহ অনেক পুরানো ব্যাথা কমাতে এই মরফিন ব্যবহার করা হয়। মুখে খাওয়ার পর ২০ মিনিট এর মধ্যে ই মরফিন কাজ শুরু করে আর ৬-৭ ঘন্টা কাজ করে আমাদের শরীরে।  তবে মরফিন এর একটি অপকারিতা হলো এটি আমাদের শরীরে নেশার সৃষ্টি করে।  দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে আস্তে আস্তে মরফিন নেয়ার ডোজ ও বাড়াতে হয়, না হলে তা আর শরীরে কাজ করে না।   
Picture: Conus magus
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা মরফিন থেকে ও ১০০ গুন শক্তিশালী ব্যাথানাশক ওষুধ আবিষ্কার করেছেন।  যা মরফিন থেকে আরো দ্রুত কার্যকরী এবং এই ব্যাথানাশক মানুষের শরীরে ও কোন মরফিনের মতো নেশার সৃষ্টি করবে না বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন।  ওষুধটির নাম Prialt ( প্রিয়াল্ট )।  যা সামুদ্রিক শামুকের বিষ থেকে তৈরি করা হয়েছে৷  এই প্রজাতির সামুদ্রিক শামুকের বৈজ্ঞানিক নাম Conus magus.. এই প্রজাতির শামুকেরা সাধারনত শিকারের কাজে এই বিষ ব্যবহার করে থাকে। এই বিষে ১০০ থেকে ও বেশী পেপটাইড থাকে। পেপটাইড হলো Amino এসিড এর একটি সুতা। এই শামুকের বেশীরভাগ পেপটাইড মানুষের জন্য খুবই ক্ষতিকর। প্রিয়াল্ট ওষুধটি ব্যবহারের সমস্যা হলো এটি আমাদের ব্রেনের ব্লাড ব্রেইন বেরিয়ারকে( Blood Brain Barrier ) অতিক্রম করতে পারে না। ব্লাড ব্রেন বেরিয়ার হলো আমাদের ব্রেন একটি সুক্ষ পর্দা যা আমাদের ব্রেনকে বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে। কিন্তু প্রিয়াল্ট যদি এই পর্দাটা অতিক্রম করতে না পারে তাহলে ব্যাথানাশক ওষুধটি আর কাজ করবে না। এই অবস্থায় এটিকে শুধু মাত্র আমাদের শরীরে স্পাইনাল কলামে ইনজেকশানের মাধ্যমে প্রবেশ করাতে হবে। এই অবস্থায় বিজ্ঞানীরা পেপটাইডকে একটি বাহকের এর মধ্যে পুশ করেন এই পদ্ধতিতেকে বলা হয় ভাইরাল ন্যানোকন্টেইনার। ভাইরাসে পাওয়া এবং প্রোটিন দিয়ে তৈরি এই ক্ষুদ্র রিসেপ্টিক্যাল হলো এই বাহক। এই প্রক্রিয়ায় বাহক কে সেল পেনিট্রেটিং ব্যবহার করে পাঠানো হয় ব্লাড ব্রেইন বেরিয়ারে। এই পেপটাইড যেকোন ধরনের মেমব্রেন পার করতে সক্ষম। গবেষকেরা ইদুরের উপর এই ওষুধ প্রয়োগ করে সন্তোষজনক ফলাফল ও  পেয়েছেন। তাই গবেষকেরা আশা করছেন শীঘ্রই প্রিয়াল্টকে ক্যাপসুল ও ইনজেকশান আকারে বাজারজাত করার জন্য। আর এই আবিষ্কারের ফলে  বিজ্ঞানে আরেকটি যুগান্তকারী দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
Blood Brain Barrier

Comments