![]() |
Covid 19 |
![]() |
স্তন্যপায়ী প্রানী লামা |
কোভিড-১৯ নিয়ে আমরা সবাই উদগ্রীব। সম্প্রতি একটি গবেষনাপত্র Nature structural & Molecular Biology জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকদের মধ্যে প্রধান দুইজন ছিলেন দ্যা ইংল্যান্ডের রোসালিন্ড ফ্রাংকলিন ইন্সটিটিউটের দুইজন বিজ্ঞানী জেমস নাইস্মিথ ও রেমন্ড ওয়েন্স। শরীরে করোনা ভাইরাস ধ্বংস করতে সক্ষম দুইটি এন্টিবডির সন্ধান পেয়েছেন তারা। বিস্তৃত গবেষনার মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে ভ্যাক্সিন তৈরি করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন তারা। দক্ষিন আমেরিকায় উট জাতীয় স্তন্যপায়ী প্রানী লামার শরীরে এমন দুইটি এন্টিবডির অস্তিত্ব পান গবেষকেরা যা শরীরের করোনা ভাইরাসকে ধ্বংস করতে ভূমিকা রাখবে৷ গবেষনা পত্রটিতে বলা হয়েছে, লামার শরীরে পাওয়া দুইটি ন্যানোবডি ACE2( Angiotensin Converting Enzymes) এর সাথে সার্স- কোভিড এর জীবানু সংক্রমনের সূত্র রয়েছে। উল্লেখ্য যে, আমাদের ফুসফুসের ACE রিসেপ্টর এর সাথে করোনাভাইরাস প্রোটিনের বন্ধন ফুসফুসে সংক্রমণ বাড়িয়ে তীব্র শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া, পরিশেষে ফুসফুসকে অকার্যকর করে দেয়।
তথ্যসূত্রঃ www.nature.com/articles/s41594-020-0469-6
আমরা অনেকেই এন্টিবডি আর এন্টিজেনকে একই অর্থে ব্যাবহার করে থাকি। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। তাই আমি এই লেখাটাতে সংক্ষেপে তা লিখার চেষ্টা করবোঃ
এন্টিবডি: রক্তকোষে তৈরি একপ্রকার রোগপ্রতিরোধক্ষম প্রোটিন যৌগ যা শ্বেত কনিকা থেকে উৎপন্ন হয়ে জীবানু এন্টিজেন এর বিরুদ্ধে কাজ করে।এন্টিবডি ৫ প্রকার- IgA, IgE, IgG, IgM এবং IgD ( মনে রাখার কৌশল হলো- GAMED) আমাদের শরীরে কোন রোগ জীবাণু প্রবেশের পর আমাদের শরীর ঐ জীবানুর বিরুদ্ধে যে উপাদান প্রতিরোধ ব্যাবস্থা গড়ে তোলে এটাকেই এন্টিবডি বলি। এন্টিবডি রোগ প্রতিরোধ করে, যেমনঃ চিকেন ফক্স হওয়ার পর মানুষ সাধারনত আর জীবনে চিকেন ফক্সে আক্রান্ত হয় না মানে তার শরীরে ঐ রোগের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে তার মানে যদি দ্বিতীয় বার চিকেন পক্সের জীবানু ঢোকা মাত্র ঐ এন্টিবডি তাকে মেরে ফেলে। এটাই ইম্যুনিটি, আর ভ্যাক্সিনের অন্যতম কন্সেপ্ট। যদি কেউ আবার আক্রান্ত হয় তাহলে বুঝতে হবে জীবানু তার স্ট্রাকচার পরিবর্তন করে ফেলেছে বা আমার ইম্যুনিটি কমে গেছে। এখানে আরো অনেক ফ্যাক্টর কাজ করে।
এন্টিজেন: দেহের বাইরে থেকে আগত রোগ সৃষ্টিকারী জীবানু। এন্টিজেন সাধারনত প্রোটিন, নিউক্লিক এসিড, কার্বোহাইড্রেট অথবা লিপিড দ্বারা নির্মিত যেমনঃ করোনা ভাইরাসের উদাহরন দেয়া যেতে পারে। এন্টিজেনকে সাধারনত চাবির সাথে তুলনা করা যায় কারন নিদিষ্ট রিসেপ্টরের সাথে মিলে গেলেই এটি সক্রিয় হয়ে উঠে।
এন্টিজেন দুইপ্রকারঃ
১)দেহে উৎপন্ন এন্টিজেন (ক্যান্সার কোষ) ২) বহিরাগত এন্টিজেন (যক্ষ্মা,ফ্লু সহ অন্যান্য)
এন্টিজেন সক্রিয় হলে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়, এসময় এন্টিবডি তৈরি ও সক্রিয় হয় এবং রোগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।
কার্যপদ্ধতি: কোনো এন্টিজেন দেহে আক্রমণ করলে রক্তস্রোতে বিশেষ রক্তকোষ এন্টিবডি নিঃসৃত করে। নির্দিষ্ট এন্টিজেনের জন্য নির্দিষ্ট এন্টিবডি থাকে। একে অপরের আজীবন শত্রু( T cell, Dendritic cell, Antigen presenting cell এরা কোন এন্টিজেনের জন্য কোন এন্টিবডি লাগবে, কিভাবে কোন ইম্যুনো কোষ দিয়ে মারতে হবে তা ঠিক করে। তারপর এগুলো পরস্পরের রেসিপ্টর সাইটে যুক্ত হয় এবং এন্টিজেনকে নিষ্ক্রিয় করে।
বিধাতার কি অপরুপ সৃষ্টি, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার ধরন গুলো কতই না বিচিত্র।
ReplyDeleteআসলেই অনেক প্রোয়জনীয় তথ্য পেলাম। 😍
ReplyDelete