দৃশ্যপট একঃ
মিঃ রহমান একজন বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। প্রতিদিন দুপুরের খাবার বাসা থেকে অফিসে নিয়ে যান। কিন্তু গতকালকে দুপুরের খাবার খাওয়ার ৩-৪ ঘন্টা পর হঠাৎ করে পেট মোচড় দিয়ে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর ডাক্তার বললেন ফুড পয়জনিং।
দৃশ্যপট দুইঃ
আতিফ ব্যাচলর বাসায় থাকে। আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই শরীর দূর্বল লাগছে, বমি করলো কয়েকবার, তারপর শুরু হলো পাতলা পায়খানা। ডাক্তারের কাছে জানায়, দুইদিন আগে সে রাস্তার পাশে একটা হোটেলে রাতের খাবার খেয়েছিলো। ডাক্তার তাকে জানায় ফুড পয়জনিং এর কারনে এমন হয়েছে।
ফুড পয়জনিং কি এবং কেন হয়ঃ খাবারের সাথে যদি ক্ষতিকর জীবাণু ও জীবাণু থেকে নিঃসৃত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ (Endotoxin) আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তখন আমাদের শরীর সাথে সাথে রিএকশান ইফেক্ট শুরু করে আর তখন ই আমাদের শরীর খারাপ করে। কখনো কখনো খাবার খাওয়ার সাথে সাথে আবার কখনো ২৪-৪৮ ঘন্টা পর আমাদের শরীর অসুস্থ হওয়া শুরু করে। সাধারনত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার রান্না করা, খাবারকে সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করা, খাবার পরিবেশন অস্বাস্থ্যকর হওয়া, খাওয়ার আগে হাত না ধোয়া সহ বিভিন্ন কারন এতে জড়িত থাকতে পারে।
উপসর্গসমূহঃ পেটে মোচড় দিয়ে বমি ও পাতলা পায়খানা,দূর্বলতা, মাথা ঘুরানো, ক্ষুধামন্দা সহ গুরুতরক্ষেত্রে অনেক সময় জ্বর ১০১.৫°F এর মতো হতে পারে, পায়খানার ও প্রস্রাবের সাথে রক্ত ও যেতে পারে।
খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী জীবাণুগুলো কি কিঃ সাধারনত ব্যাকটেরিয়াঘটিত কারনে খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে থাকে। কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া এর মধ্যে অন্যতম, যেমনঃ
E. Coli
Listeria
Salmonella
Campylobacter
C.botulism
CDC(Centers for Disease Control and Prevention) এর এক তথ্য অনুসারে, Salmonella ব্যাকটেরিয়াঘটিত কারনেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ১০ লক্ষ মানুষ খাদ্যে বিষক্রিয়া জনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়।
কিছু কিছু ভাইরাসও খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী তাদের মধ্যে অন্যতম হলো Norovirus।
সতর্কতা:
১)গরমকালে খাদ্য তাড়াতাড়ি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই খাদ্যকে সঠিক তাপমাত্রায় ফ্রিজে সংরক্ষন করতে হবে।
২) ফাস্টফুড/ জাংকফুড জাতীয় খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
৩) অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার রান্না ও সংরক্ষন করা যাবে না।
৪) খাওয়ার আগে হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
৫) খাবারের উপর মাছি বা অন্য কিছু যাতে না বসে সেদিকে নজর রাখতে হবে।
৬) পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
খাদ্যে বিষক্রিয়া জনিত কোন সমস্যায় দেরী না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে কারন খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকে মৃত্যুও হতে পারে।
Comments
Post a Comment